৪২৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন ঢাবির সিনেটে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের জন্য ৪২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষা সংক্রান্ত খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের মাত্র ১২.৯৯ শতাংশ। ব্যায়ের সবচেয়ে বড় খাত হিসেবে বেতন ভাতা এবং পেনশন বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৭৫.৩৩ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আজ শনিবার কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন এ বাজেট উত্থাপন করেন।

maxresdefault

প্রস্তাবিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্য ৩৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে ৩৯ কোটি টাকাসহ সর্বমোট ৪১০ কোটি ১৫ লাখ টাকার আয় ধরা হয়েছে। ফলে আগামী অর্থ-বছরে বাজেটে ঘাটতি হবে প্রায় ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ব্যায়ের খাতগুলো হলো- বেতন-ভাতা সহায়তা ২৫০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, পেনশন বাবদ ৭০ কোটি টাকা, সাধারণ আনুষঙ্গিক ৪০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, শিক্ষা সহায়ক ৫৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, মেরামত এবং সংরক্ষণ ও পুনর্বাসন বাবদ ৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, মূলধন মঞ্জুরী ৩ কোটি টাকা। হেকেপের বরাদ্দ ব্যতিত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানসহ সিনেট সদস্যগণ এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক তার অভিভাষণে বলেন, সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ উন্মুক্ত করতে হবে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতি, ভাষা, ধর্ম, অর্থনৈতিক অবস্থা, শারীরিক অসমর্থতা, সাংস্কৃতিক কিংবা কোন সামাজিক বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ গবেষক হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে হতে হবে ব্যাপ্ত, জীবন, সমাজ ও সভ্যতার বিবিধ বিষয় আশ্রয়ী।

তিনি পরিবর্তিত বিশ্ব বাস্তবতায় সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, শিক্ষকেরাই পারেন সকল সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে শিক্ষার্থীদের স্বদেশসংলগ্ন, বিজ্ঞান মনস্ক ও প্রগতিমুখী করে গড়ে তুলতে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অন্যথায় এসব প্রতিষ্ঠান জ্ঞান প্রসারণের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। সমাজের প্রত্যাশা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজ করতে হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিকসহ জাতীয় শিক্ষা পরিকল্পনার সব পর্যায়ে সমন্বয় সাধন করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উদ্যোগ ও অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ভিসির অভিভাষণ ও কোষাধ্যক্ষের বাজেট পেশের পর সিনেট সদস্যগণ অভিভাষণ ও বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।