শিক্ষকতায় ফিরে যাচ্ছেন আতিউর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় ফিরে যাওয়ার কথা জানালেন ড.আতিউর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক পদ থেকে প্রেষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় গুলশানে গভর্নর হাউসে এ সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান। ড.আতিউর রহমান জানান, একজন রাখাল বালকের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে পারার মতো ঘটনার জন্য তিনি বাংলাদেশের জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আবারো শিক্ষকতা এবং গবেষণায় ফিরে যাবেন।

তিনি বলেন, কেউ আমাকে যখন জিজ্ঞেস করেন, আপনার কোন পরিচয় সবচেয়ে বড় মনে করেন। আমি নির্দ্বিধায় বলি শিক্ষকতা। আবার সেই সুযোগ এসেছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ হবে।

উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অনেকেই তার শিক্ষার্থী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা অনেকেই আমার শিক্ষার্থী ছিলে। আবার হয়তো তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে।

১৯৫১ সালে জামালপুরের ছোট্ট একটি গ্রামে জন্ম আতিউর রহমানের। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা। এরপর ক্যাডেট কলেজে। ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড মেধাবী আতিউর অর্থাভাবে ক্যাডেট কলেজে পড়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পরে। গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় সেদিন তিনি ১৫০ টাকা তুলে কলেজের খরচ তুলেছিলেন।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করেছেন। পরবর্তীতে পিএইচডি করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে। কর্মজীবন শুরু করেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনে প্ল্যানিং অফিসার হিসেবে এছাড়া দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা বিআইডিএস এর রিসার্চ ফেলো ছিলেন প্রায় ২৭ বছর।

এরপর দায়িত্ব নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে। গভর্নর হওয়ার আগে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। প্রকৃতিপ্রেমী ও সংস্কৃতিমনা এই অর্থনীতিবিদ দরিদ্র জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি নিয়েও কাজ করেছেন দীর্ঘদিন।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণ বিপ্লব নিয়ে বহু গবেষণামূলক লেখাও রয়েছে তার। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪৫টি।