বিসিএস শিক্ষকদের দাবি আদায়ে আল্টিমেটাম

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আশ্বাসের পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির নেতারা নতুন পেস্কেলে দাবি আদায়ে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি না মানলে আগামী ৪ ও ৫ জানুয়ারি পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিলনায়নতনে এক সংবাদ সম্মেলন এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়।

সংগঠনের সভাপতি নাসরীন বেগম সংবাদ সম্মেলনে অষ্টম পে-স্কেলে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে ‘প্রতারণা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বলেন, অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম থেকে সরাসরি তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক হতেন।

তিনি বলেন,  চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকদের অর্ধেক সিলেকশন গ্রেড পেয়ে তৃতীয় গ্রেড পেতেন। নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের ফলে অধ্যাপকদের চতুর্থ গ্রেড থেকেই অবসরে যেতে হবে। ফলে মর্যাদা ছাড়াও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।

নতুন বেতন কাঠামোতে অধ্যাপকদের পদমর্যাদা ও বেতনক্রমের অবনমন করা হয়েছে। সরকারের এ ব্যবস্থা ‘সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করার সামিল বলে মনে করেন নাসরীন বেগম।

তিনি অভিযোগ করেন, বেতন কাঠামো চূড়ান্তের আগে অর্থ সচিবের সঙ্গে শিক্ষকদের সভা হয়েছিল। শিক্ষা ক্যাডারের বৈষম্য নিরসনে সচিব আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বেতন কাঠামোর গেজেটে কোনো দিক নির্দেশনা নেই। আমাদের সাথে রীতিমত প্রতারণা করা হয়েছে।

১ জুলাই থেকেই পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকদের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে তৃতীয় গ্রেডের বেতন প্রদানের দাবি জানিয়ে নাসরীন বলেন, নায়েম মহাপরিচালক, এনসিটিবি চেয়ারম্যান, সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা সদরের অনার্স ও মাস্টার্স কলেজের অধ্যক্ষের পদকেও গ্রেড-১ এ উন্নীত  করতে হবে।

সেই সঙ্গে মাউশি, নায়েম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক; অনার্স/মাস্টার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষা বোর্ডের সচিব এবং এনসিটিবির সদস্যদের পদকে দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীত, অনার্স ও মাস্টার্স রয়েছে এমন বিভাগে দ্বিতীয় গ্রেডের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি এবং বিকল্প ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবিও জানান তিনি।

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ না নিলে আগামী ৪ ও ৫ জানুয়ারি সরকারি কলেজের শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

দুই দিন কর্মবিরতি পালনের পর ২২ জানুয়ারি ঢাকায় সমিতির সাধারণ সভায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁমকিও দেন তিনি। দাবি আদায়ে ২৩ ডিসেম্বর শিক্ষা সচিব এবং ২৪ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে সংগঠনের নেতাদের।

এসময় সমতির সাধারণ সম্পাদক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।