বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট পদে নিয়োগ!

আবেদনের যোগ্যতা
এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় আলাদাভাবে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। ইংরেজি মাধ্যমের প্রার্থীদের ‘ও’ লেভেলে ছয়টি বিষয়ের কমপক্ষে তিনটিতে এ গ্রেড এবং তিনটিতে বি গ্রেড, ‘এ’ লেভেলে দুটি বিষয়ের মধ্যে কমপক্ষে একটিতে এ গ্রেড এবং একটিতে বি গ্রেড পেতে হবে। আবেদন করতে পারবে ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও। ১ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২১ বছর। সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত প্রার্থীদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ২৩ বছর। পুরুষ প্রার্থীদের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, ওজন ৫০ কেজি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং প্রসারিত অবস্থায় থাকতে হবে ৩২ ইঞ্চি।

নারী প্রার্থীদের উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি, ওজন ৪৭ কেজি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ২৮ ইঞ্চি এবং প্রসারিত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি হতে হবে। পুরুষ ও নারী উভয় প্রার্থীদের উচ্চতা ও বয়সের সঙ্গে ওজনের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। প্রার্থীকে জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ও অবিবাহিত হতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরতদের বৈবাহিক অবস্থা শিথিলযোগ্য। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ও সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত হলে বা আইএসএসবি থেকে দুবার বাদ পড়লে আবেদন করা যাবে না।

slider-image-4

আবেদনের নিয়ম
২ জানুয়ারি শুরু হয়েছে আবেদন প্রক্রিয়া। চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবেদন করতে ক্লিক করুন: আবেদন ফরম । আবেদন ফি বাবদ ১০০০ টাকা জমা দেওয়া যাবে বিকাশ, এমক্যাশ, ট্রাস্ট ব্যাংক মোবাইল মানি, টেলিটক প্রিপেইড এসএমএস, ভিসা বা মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে। আবেদনের নিয়ম, আবেদন ফি পরিশোধের পদ্ধতি ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। অনলাইনে আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক সাক্ষাত্কারের কলআপ লেটার সংগ্রহ করে প্রিন্ট করতে হবে, না হলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। ক্যাডেট কলেজ, বিএনসিসি, এমসিএসকের ক্যাডেটরা নিজ নিজ কলেজ বা রেজিমেন্টের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে।

বাছাই প্রক্রিয়া
প্রাথমিক নির্বাচনী পরীক্ষায় স্বাস্থ্য ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিভিন্ন সেনানিবাসে প্রাথমিক নির্বাচনী পরীক্ষা হবে ৭ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষার তারিখ ও কেন্দ্র প্রার্থীর কলআপ লেটারে উল্লেখ থাকবে। নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত হতে না পারলে বাছাই চলাকালে যেকোনো দিন পরীক্ষা দেওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে আগেই সরাসরি নিজ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে জানাতে হবে।

বিগত বছরে বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নির্বাচিতরা জানান, বাছাই পরীক্ষায় প্রার্থীর শারীরিক ফিটনেস যাচাই করা হয়। বর্ণনা অনুযায়ী উচ্চতা, ওজন, বুকের মাপ যাচাই করা হয়। উচ্চতা এবং বয়সের সঙ্গে ওজনের সামঞ্জস্য না থাকলে বাদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চোখের দৃষ্টিসীমা, শারীরিক ত্রুটি বা জটিল রোগ আছে কি না দেখা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন করা হবে তা নির্ভর করে বাছাই প্যানেলের কর্মকর্তাদের ওপর।

প্রাথমিক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা হবে প্রার্থীর সাক্ষাত্কারপত্রে উল্লিখিত কেন্দ্রে। লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হবে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকা জানা যাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়েব ঠিকানায়।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নির্ধারিত তারিখে ঢাকা সেনানিবাসে আইএসএসবিতে অংশ নিতে হবে। চার দিনের আইএসএসবি পরীক্ষা হয় দুই ধাপে। প্রথম ধাপে প্রথম দিন সকালে বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা ও পিকচার পারসেপশন অ্যান্ড ডেসক্রিপশন টেস্ট (পিপিডিটি) নেওয়া হয়। এ দুই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রথম ধাপ পেরোতে পারলে সুযোগ মিলবে দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণের। প্রথম দিন দুপুরে দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরপর লিখতে হয় নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বাংলা ও ইংরেজিতে রচনা। দ্বিতীয় দিনে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বাংলা ও ইংরেজিতে দলগত আলোচনা, বক্তৃতা, শারীরিক সামর্থ্য পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তৃতীয় দিন প্রার্থীকে অংশ নিতে হয় প্ল্যানিং ও কমান্ড টেস্টে, এরপর নেওয়া হবে মৌখিক পরীক্ষা। চতুর্থ দিন ফল ঘোষণা করা হয়, উত্তীর্ণদের দেওয়া হয় গ্রিন কার্ড, বাদ পড়লে রেড কার্ড। আইএসএসবি পরীক্ষার বিস্তারিত ও সাক্ষাত্কারের তারিখ জানা যাবে www.issb-bd.org ওয়েবসাইটে। আইএসএসবিতে গ্রিন কার্ডপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্যদের নির্বাচিত করা হবে এবং তারা যোগ দেবেন ক্যাডেট হিসেবে।

প্রশিক্ষণ
নির্বাচিত ক্যাডেটদের বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে থাকতে হবে চার বছর। প্রথম তিন বছর দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। চতুর্থ বছর অফিসার হিসেবে স্নাতক সম্মান বা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। বিইউপির অধীনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, পদার্থবিদ্যাসহ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি দেওয়া হবে। এমআইএসটির অধীনে মিলবে ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। প্রশিক্ষণ শেষে লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন দেওয়া হবে।

সুযোগ-সুবিধা
প্রশিক্ষণকালীন মাসে ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে পদবি অনুযায়ী বেতন-ভাতা দেওয়া হবে। রয়েছে বাসস্থান, এএইচএস এবং ডিওএইচএসে প্লট ও ফ্ল্যাটপ্রাপ্তির সুবিধা। দেশে ও বিদেশে বিনা খরচে মিলবে উন্নতমানের চিকিত্সা সুবিধা। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান, বিদেশে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে নিয়োগ পেতে পারেন সামরিক বা সহকারী সামরিক উপদেষ্টা পদে। রয়েছে যোগ্যতা অনুযায়ী স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভের সুযোগ।

যোগাযোগ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন তথ্য সেল, সামরিক এক্সচেঞ্জের ফোন নম্বর : ০২-৮৮৭১২৩৪, এক্সটেনশন ২৪৮২ অথবা ০২-৮৭৫২৪৯৬-এর মাধ্যমে সরাসরি তথ্য জানা যাবে। সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটেও (www.joinbangladesharmy.mil.bd)  মিলবে বিস্তারিত তথ্য।