প্রাথমিকে নারীদের আবেদনের যোগ্যতাও স্নাতক করা হচ্ছে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নারীদের আবেদন করার যোগ্যতা স্নাতক করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা উন্নীত করার জন্য নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। শিগগির তারা নিয়োগবিধির সংশোধনের খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

ডিপিই সূত্র জানায়, মূলত দুটি কারণে শিক্ষক পদে আবেদন করার জন্য নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি খোলার চিন্তাভাবনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর জন্য একজন শিক্ষকের যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক হওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতি সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির এ পদের জন্য কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রি থাকা দরকার। নারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকায় এ পদে তাঁদের উন্নীত হওয়ার হার কম।

বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য পুরুষদের আবেদন করার যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি। নারীরা উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি বা সমমান) পাস হলেই আবেদন করতে পারেন। উভয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক করা হচ্ছে।

শিক্ষক হওয়ার জন্য নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়াতে হলে নিয়োগবিধির সংশোধন প্রয়োজন। এ জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছু সময় লাগবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, ‘নারী শিক্ষকদের অধিকাংশই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর। তবে আবেদনের যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পাস। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াতে একজন শিক্ষকের যোগ্যতা স্নাতক হওয়া প্রয়োজন। এ জন্যই নারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক করার কাজ চলছে। আমরা প্রস্তাব তৈরি করছি। শিগগির মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র এস এম ছায়িদ উল্লা বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে নারী ও পুরুষ শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এক করার দাবি করে আসছি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকদের দুই ধরনের বেতন স্কেলও তুলে দেওয়া উচিত। চার-পাঁচ বছরের একটা সীমা নির্ধারণ করা উচিত, এর মধ্যে সবাইকে প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। এ পদে নিযুক্ত হওয়ার যোগ্যতা স্নাতকোত্তর হওয়া উচিত। এ পদে বেতনও দশম গ্রেডে হওয়া উচিত।’

সূত্র: কালের কণ্ঠ