দুই জমজ বোন একই বিশ্ববিদ্যালয়, একই বিষয়, একই ফলাফল!

দুই জমজ বোন। তাদের মধ্যে সমিল থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে পড়ে একেবারে একই ধরনের ফলাফল করাটা বিস্ময়করই বটে। তবে সেই বিস্ময়কর ঘটনাটিই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ায়। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে অধ্যায়ন করেন দুই জমজ বোন আনুজা এবং শায়িলজা।
প্থরম বর্ষশেষে একই গ্রেড অর্জন করে তারা। কোন রকম চেষ্টা ছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই যেন মিলে যায় এই যময দুই বোনের সকল কর্মকাণ্ড।

Anuja-and-Shailja-Chalishazar-from-Howells-school-Cardiff

গত বছর এ লেভেলে একই বিষয়ে দুই বোনের একই গ্রেড প্রাপ্তিতে তাজ্জব বনে যায় তার পরিবার। পরবর্তীতে কোন রকম আলোচনা ছাড়াই একই বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে তারা। আর এখন ১২ মাস পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষে একই গ্রেডও পেয়েছে তারা।

১৯ বছর বয়সী এই জমজযুগল কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিনে অধ্যয়নরত। তারা দুজনেই জীববিজ্ঞান, গণিত এবং রসায়নে এ স্টার গ্রেড পেয়েছে। মাণিকজোড় একে অপরের পড়াশুনা অনুকরণ করেন। শায়িলজা বলেন, ‘আমরা এখনও এর থেকে বেরোতে পারলাম না। এমনকি আমাদের বাবা-মা’ও বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিল না।

জমজ যুগলের বয়স পাঁচ বছর থাকাকালিন তাদের পরিবার ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ার সাউথ ওয়েলসে চলে আসেন। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, জমজ বোনদ্বয়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তারা প্রত্যেকেই পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে কার্ডিফই তাদেরকে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়। তাদের দুজনকেই একই দিনে সাক্ষাতকারের জন্য ডাকা হয় এবং একই সময়েই তাদেরকে ভর্তির প্রস্তাব করা হয়। উল্লেখ্য, সাক্ষাতকারের জন্য তারা পরস্পরকে সহায়তাও করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের বর্ষেই ৩০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। কিন্তু তারা দুজনেই দশ জন নিয়ে গঠিত একই সেমিনার গ্রুপে পড়ে। শায়িলজা বলেন, ‘একসাথে দুজনে থাকাটা মজার। আমরা একসাথে ক্লাস করি, পড়ি আর এজন্য একই নম্বরও পাই।’

Anuja-and-Shailja-Chalishazar-from-Howells-school-Cardiff (1)

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই যময বোনদ্বয়কে মিলিয়ে ফেলে। শায়িলজা বলেন, ‘মানুষজন আমাদের সহজেই মিলিয়ে ফেলে। আমার মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক মানুষ জানে যে আমরা যময কিন্তু আর অর্ধেক মানুষ আদৌ জানে না এই সত্যটি। কখনো কখনো মানুষজন আমাকে আনুজা ভেবে বসে। মাঝে একজন আমাকে বলছিল, তোমরা যময। আমি এতদিন বুঝতেই পারিনি। এমনকি আমাদের বন্ধুরাও মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিতে পড়ে।’ যময যুগল এক বছরেই গড়ে ৬৮ শতাংশ নম্বর অর্জন করেছে। তবে সামনে এখনও চার বছর বাকি। এখন দেখার বিষয় তাদের এই অভিন্নতা আর কতদিন চলমান থাকে।