ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আর নেই

ভর্তির শর্ত পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের একবারই অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ একবারই

মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০১৫-১৬) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ফলে ওই বছর শুধু ২০১৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
চলতি শিক্ষাবর্ষসহ আগের বছরগুলোতে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের পর শিক্ষার্থীরা পরপর দুইবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আসছিল।
সভা শেষে উপাচার্য ড. আরেফিন সিদ্দিক সমকালকে বলেন, ‘দুইবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলে অসম প্রতিযোগিতা হয়। কারণ দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থী এক বছর ধরে ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়ে আর অন্যজন উচ্চ মাধ্যমিকে পাস করেই ভর্তি পরীক্ষায় বসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবার অনেক শিক্ষার্থী প্রথমবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে পুনরায় ভর্তি বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। ফলে যেখানে প্রথমবার ভর্তি হয়েছে, সেখানকার আসন ফাঁকা হয়ে যায়।’
উপাচার্য বলেন, ‘কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পরদিনই ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছি। একবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলে শিক্ষার্থীদের আর কোচিং সেন্টারে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।’

ইংরেজি বিভাগে ভর্তির শর্ত শিথিল

শর্ত অনুসারে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদের অধীন ‘খ’ ইউনিট থেকে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির শর্ত শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাধারণ ভর্তি কমিটি। তবে ‘ঘ’ ইউনিট থেকে উত্তীর্ণদের জন্য আগের শর্তই বহাল রাখা হয়েছে।
এ বছর ইংরেজি বিভাগে ভর্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজিতে ২০০ নম্বর থাকার পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ ইংরেজিতে ন্যূনতম ২০ এবং ইলেকটিভ ইংলিশে ১৫ পাওয়ার শর্ত ছিল।
এখন ‘খ’ ইউনিট থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য ওই শর্ত শিথিল করে পাস নম্বর সাধারণ ইংরেজিতে ২০ এর পরিবর্তে ন্যূনতম ১৮ নম্বর এবং ‘ইলেকটিভ ইংলিশে’ ১৫ এর পরিবর্তে ন্যূনতম ৮ নম্বর করা হয়েছে।
ঢাবি উপাচার্য জানান, এ ক্ষেত্রে ‘খ’ ইউনিট থেকে যতজন শিক্ষার্থী পাওয়া যায় তাদের ভর্তি করা হবে। আর ‘ঘ’ ইউনিট থেকে বাকি আসন পূর্ণ করা হবে।

শর্ত শিথিল করলেও আসন ফাঁকা থাকছে

এদিকে, ভর্তির শর্ত শিথিল করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে এ বছর অনেকগুলো আসন খালি থাকছে।
‘ঘ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ ও ‘খ’ ইউনিট ভর্তি কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যাপক সদরুল আমিনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ইংরেজি বিভাগে মোট আসন ১৫০টি। ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিট থেকে আসার কথা ১২৫ জন এবং ‘ঘ’ ইউনিট থেকে ২৫ জন।
শিথিল করা শর্ত অনুযায়ী ‘খ’ ইউনিট থেকে যোগ্য প্রার্থী রয়েছে ১২৫ জনের স্থলে ১৭। অন্যদিকে ‘ঘ’ ইউনিট থেকে শর্ত পূরণ করতে পারেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১৭ জন। অর্থাৎ মোট ১৩৪ জনের সবাই ভর্তি হলেও ফাঁকা থাকবে ১৬টি আসন। তবে তাদের মধ্যে কতজন ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ভর্তির সাক্ষাৎকার শেষ হওয়ার পর।
সৌজন্যেঃ সমকাল