জাকজমকভাবে পালিত হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

উৎসবমুখর পরিবেশ আর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল উদযাপিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে “উচ্চশিক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম সাজে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের করিডোর বেলুন, ফেস্টুন আর আল্পনার ছোঁয়ায় বর্ণিল রূপ ধারণ করে। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, গবেষণা ও আবিস্কার বিষয়ক প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।

DU_Logxo
বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মলে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন এবং উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন।

এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন হল থেকে শোভাযাত্রাসহ প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মলে জমায়েত হন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক র‌্যালির নেতৃত্ব দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, কর্মকর্তা, কর্মচারী, অভ্যাগত অতিথি, ছাত্র-ছাত্রী, বিএনসিসি, রোভারস্ ও রেঞ্জারস ইউনিটের সদস্যরা র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়।

সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষা সচিব মো: নজরুল ইসলাম খান।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ৯৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যসহ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর শুধু শ্রেণিকক্ষেই এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকেনি। দেশপ্রেম, নৈতিক মূল্যবোধ, ইতিহাস-ঐতিহ্য ধারণসহ জাতিকে মানবিক মূল্যবোধে জাগ্রত হওয়ারও শিক্ষা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মূল প্রবন্ধে শিক্ষা সচিব মো: নজরুল ইসলাম খান টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

এছাড়া অন্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগ নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগে বিজ্ঞান বিষয়ক অনুষ্ঠান বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগ আয়োজিত গবেষণা ও আবিস্কার বিষয়ক প্রদর্শনী, দুর্লভ পা-ুলিপি প্রদর্শনী, চারুকলা অনুষদ আয়োজিত শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চারুকলা অনুষদের গ্যালারীতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম প্রদর্শনী এবং নাটমন্ডল মিলনায়তনে রহমত আলী নির্দেশিত নাটক ‘স্বদেশী নক্শা’ প্রদর্শনী।