চলতি মাসে নিয়োগ বঞ্চিত ২৩১ জন শিক্ষককে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট

Primary_Education_sm_859798253

উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর বঞ্চিত বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে প্যানেলভুক্তদের নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

নিয়মিত নিয়োগের সঙ্গে বাদ পড়াদের সংযুক্ত করে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার (১৮ মে) বাংলানিউজকে বলেছেন, উচ্চ আদালতে রিটের কারণে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন আটকে আছে। তাদের জন্য কিছু পদ বাদ রেখে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৩ নম্বর শর্তে উপজেলাভিত্তিক নিয়োগের কথা বলা হয়।

পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শেষে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল উত্তীর্ণ ৪২ হাজার ৬১১ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ২০১২ সালের ২১ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এক পরিপত্রে উপজেলাভিত্তিক নয়, ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের কথা জানায়। এরপর বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১৪ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু যারা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে নওগাঁ জেলার ১০ জন ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। এ রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৮ জুন তাদের ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগ দিতে রায় দেন হাইকোর্ট।

পরবর্তীতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারি করা হলে হাইকার্টের আদেশের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আপিল করলে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

চলতি মাসে নিয়োগ বঞ্চিত ২৩১ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর আগে হাইকোর্ট আরও ২৬৮ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে নওগাঁর ১০ জনকে ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আওয়াতায় বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রাক-প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ১০ ডিসেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) আওতায় এই বিজ্ঞপ্তির আলোকে অস্থায়ীভাবে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা।

আর গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, এতে ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, প্রাক-প্রাথমিকের পরীক্ষাটি দ্রুত শেষ করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পেলেই ডিজিটাল পদ্ধতির প্রশ্ন প্রণয়ন করে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী মাসে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে হাইকোর্টে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানির অপেক্ষায় রয়েছেন প্যানেলভূক্ত আরও ৪২ জন।

অধিদপ্তরের ডিজি মো. আলমগীর বলেন, রিটের নিষ্পত্তি হলে দ্রুত সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে।