খুব শিগগিরই নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ

Nahidমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুব শিগগিরই নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পিএসসির আদলে একটি কমিশন গঠন হবে শিগগিরই।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিটিউটে ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন বিধিমালা-২০০৬’র সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১১ নভেম্বরের এক আদেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থাপনা কমিটির ক্ষমতা খর্ব করে গত ২২ অক্টোবর তারিখ দিয়ে এসআরও জারির মাধ্যমে ওই বিধিমালার সংশোধনী প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজকের মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে নতুন পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামানা, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগ হলে ম্যানেজিং কমিটির দৌরাত্ম শেষ হবে, স্বচ্ছতাও নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তারা।

তাঁরা এনটিআরসিএ’র অধীন বর্তমান পরিচালিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের পরিবর্তে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষারভিত্তিতে শুন্যপদের সংখ্যার সাথে সঙ্গতি রেখে মেধাতালিকা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় গৃহীত উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানান।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, একজন শিক্ষকের মৃত্যু হলে জাতির মৃত্যু হয়। একটি স্কুল কলেজের দালান-কোঠা, টেবিল-চেয়ারসহ অনেক কিছু আছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শিক্ষক। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ভালো হবে। যিনি পড়ান তিনি মূল্যবোধও ধারণ করেন। কিন্তু এখন নানা কারণে শিক্ষক নিয়োগের মান নেমেছে। দুর্নীতি হচ্ছে। ফলে অযোগ্য মানুষ শিক্ষক হচ্ছেন। যোগ্যরা হতে পারছেন না।

তিনি নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি যোগ্য লোককে প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন।

জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি মনে করি নতুন পদ্ধতি নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে কার্যকর করতে পারলে মেধাবীদের শিক্ষতায় আকৃষ্ট করা যাবে আবার একই সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত হবে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডিতে এমপিদের ক্ষমতা মোটেই রাখাা উচিত নয়। স্থানীয় শিক্ষিত জনগেীষ্ঠীর মধ্য থেকে কমিটিতে মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে কয়েকজন প্রধানশিক্ষক বলেছেন, তাড়াতাড়ি নিয়োগ চালু করা উচিত। প্রধানশিক্ষক ও সহকারি প্রধানশিক্ষক নিয়োগও কেন্দ্রীয়ভাবে হওয়া উচিত।

অপরদিকে গাজীপুর একটি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম বলেন, বর্তমানে দুর্নীতি রয়েছে ৪০ ভাগ আর কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ হলে দুর্নীতি বেড়ে ১০০ ভাগ হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে নিবন্ধন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব আজফার উদ্দিন বলেন, কমিশন থেকে একটি তালিকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে এবং তালিকার মধ্য থেকে নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।

চেয়ারম্যানের ঠিক উল্টোটা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ। আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, মেধা তালিকাও তৈরি করবে কমিশন এবং শূন্য পদের তালিকা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগও দেবে কমিশন।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি আফছারুল আমীন ও শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: দৈনিক শিক্ষা