ক্যাডারের চেয়ে বেশি নিয়োগ পাচ্ছেন নন-ক্যাডারে!

বিসিএসে ক্যাডারের চেয়ে নন-ক্যাডার পদে বেশি নিয়োগের সুপারিশ করে রেকর্ড করতে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ৩৪তম বিসিএসে চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৮৪ জনের মধ্যে থেকে ২ হাজার ১৭৫ জনকে বিভিন্ন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল পিএসসি। অথচ এখন পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদে প্রায় ২৩শ’ জনকে নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। অর্থাত্ ক্যাডারের চেয়ে নন-ক্যাডার পদে বেশি নিয়োগ পাচ্ছেন ৩৪তম বিসিএসে। এই বিসিএসে উত্তীর্ণ ৬৮ শতাংশ পরীক্ষার্থীই চাকরি পেতে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, ৩৪তম বিসিএসে ক্যাডারের চেয়ে নন-ক্যাডার পদে বেশি নিয়োগ সুপারিশ করা হচ্ছে। এর আগে এতো বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়নি।

২০১০ সালের ১০ মে প্রজ্ঞাপন করে নন-ক্যাডার বিধিমালা-২০১০ জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, শূন্য পদের ৫০ শতাংশ বিসিএসে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করা হবে। পরবর্তী বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত আগের বিসিএস থেকে নিয়োগ চলবে। ২০১৪ সালে এই বিধি সংশোধন করে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদের পাশাপাশি দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা পদেও নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা হয়। ২৮তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২৮ থেকে ৩৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদে মাত্র ১ হাজার ৯৫৩ জন নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। এর মধ্যে ২৮তম বিসিএসে ২৯৯ জন, ২৯তম বিসিএসে ১৯৩ জন, ৩০তম বিসিএসে ৩৬৩ জন, ৩১তম বিসিএসে ১২০ জন, ৩২তম বিসিএসে ৬৬ জন এবং ৩৩তম বিসিএসে ৯১২ জন। গত ৬টি বিসিএসে ৩৯ হাজার ৪১৯ উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ হাজার ৫৬০ জন বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন।  ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাডার পেয়েছেন। বাকী ২০ হাজার ৮৫৯ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৯৫৩ জন  নন-ক্যাডারে নিয়োগ পান।

নন-ক্যাডার নিয়োগে রেকর্ড

২৮ থেকে ৩৩তম বিগত ৬টি বিসিএসে যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ নন-ক্যাডারে চাকরি সেখানে ৩৪তম বিসিএসেই ৩৫ শতাংশ চাকরি পাচ্ছেন। ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৮৪ জনের মধ্যে থেকে ২ হাজার ১৭৫ জন ক্যাডার পান। বাকী ৪ হাজার ৪০৯ জন নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য রাখা হয়। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৯৯ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে ৪০৯ জন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডারে পদে আছে ১৩৯০ জন। সর্বশেষ গতকাল বুধবার নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে ৮৯৮ জন নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও সমাজসেবা অফিসার, সঞ্চয় অফিসার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কর পরিদর্শক পদেও নিয়োগে সুপারিশ করেছে পিএসসি। নিয়োগে সুপারিশকৃতদের তালিকা পিএসসি’র ওয়েবসাইটে (www.bpsc.gov.bd) পাওয়া যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে আরো অন্তত ৫০০ জনকে দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করতে যাচ্ছে পিএসসি। ফলে শুধু ৩৪তম বিসিএস থেকেই ২ হাজার ৩০০ জন নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। ৩৪তম বিসিএসে নন-ক্যাডার নিয়োগের সুপারিশের কারণেই ৩৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় একটু বিলম্ব হয়েছে। যদিও আগামী ২৪ আগস্টের মধ্যে ফলাফল ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে পিএসসির।

পিএসসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ৩৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত ৩৪তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।