আমেরিকায় উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পেতে যা করতে হবে

বর্তমান সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর অনেক দেশের শিক্ষার্থীদেরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার আগ্রহ বাড়ছে।

আমাদের মতো নিম্ন-মধ্য আয়, মধ্য আয় কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে উচ্চ আয়ের দেশের দেশের শিক্ষার্থীরাও উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নিচ্ছেন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে।

study-in-usa1

কারণ কখনো প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান-ডিগ্রি-পেশা, কখনো বা উন্নত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা। আর পুরো বিশ্বেই এই আগ্রহের বড় একটি কেন্দ্রবিন্দু ‘আমেরিকা’ তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অজস্র শিক্ষার্থী আবেদন করেন সে দেশের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়ালেখার জন্য। এর একটি অংশ কিন্তু আমাদের দেশ থেকেও থাকে। পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আবেদনকারীর থাকা চাই কিছু অত্যাবশ্যকীয় যোগ্যতা। প্রাথমিকভাবে এগুলো জেনে রাখা আগ্রহীদের জন্য জরুরি।

জিপিএ : অধিকাংশ কলেজের ওয়েবসাইটের মতে, আবেদনের জন্য এ+ বা গোল্ডেন এ+ থাকা বাধ্যতামূলক নয়। বিভাগ অনুযায়ী পদার্থবিজ্ঞান, অর্থনীতি, গণিতের মতো প্রধান বিষয়গুলোতে এ+ থাকলেই অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করা যাবে।

এসএটি এবং টোফেল স্কোর : জিপিএর পরেই আলোচনায় আসে এসএটি (স্যাট) অথবা টোফেল স্কোরের প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রে একেকটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা একেক রকম। তবে অধিকাংশ কলেজই স্যাট-১ এবং স্যাট ২-এর ন্যূনতম দুটি বিষয়ের স্কোর চায়। হার্ভার্ডের মতো কিছু নামিদামি প্রতিষ্ঠান স্যাট ২-এর তিনটি বিষয়ের স্কোর চায়। এর পাশাপাশি কিছু প্রতিষ্ঠান আপনার টোফেল স্কোরও চাইতে পারে।

তবে এসএটি কিংবা টোফেলের কোনো নির্ধারিত বা ন্যূনতম স্কোর নেই। কারণ শুধু এই পরীক্ষাগুলোর উচ্চ স্কোর কখনোই ভর্তি নিশ্চিত করে না। স্কোরই প্রার্থী বাছাইয়ের একমাত্র মানদণ্ড নয়। তবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্যাট ১-এ ২০০০+, স্যাট ২-এ ২২০০+ এবং টোফেল ১০৫+ স্কোরকে যথাযথ বলে ধারণা করা হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে প্রায়ই এর ব্যতিক্রম দেখা যায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোর পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, অপেক্ষাকৃতভাবে কম স্কোরধারী শিক্ষার্থীও ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, আবার বেশি স্কোরধারীও বাদ পড়েছে। এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতি তৈরি করে দেয় অ্যাকাডেমিক পড়ালেখার বাইরে অন্যান্য কার্যক্রম।

শিক্ষার্থী ভর্তির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুমেয় পর্যাপ্ত অথবা ন্যূনতম স্কোরের তালিকা দেখতে পাবেন এই সাইটগুলোয় :

টোফেল স্কোরের জন্য

স্যাট স্কোরের জন্য

শিক্ষাবহির্ভূত অথবা সহশিক্ষা কার্যক্রম :
আমেরিকাসহ অন্যান্য উন্নত দেশে উচ্চশিক্ষার ভর্তির জন্য আপনার অন্যতম সহযোগী হতে পারে আপনার শিক্ষাবহির্ভূত অথবা সহশিক্ষা কার্যক্রম। সহশিক্ষা কার্যক্রম যাই হোক না কেন, সেটা হতে পারে আপনার পড়ারই কোনো বিষয় অথবা গান, নাচ, বিতর্ক, খেলাধুলা, লেখালেখি কিংবা স্বেচ্ছাসেবার মতো অন্যান্য বিষয়। এ ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক/জাতীয় অর্জন কিংবা স্বীকৃতি আবেদনে এনে দিতে পারে বাড়তি সুবিধা এবং গ্রহণযোগ্যতা। স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম এবং স্বীকৃতি আপনার ভর্তির আবেদনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে পারে।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি, কাগজপত্র :
ভর্তির জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই আছে আলাদা মানদণ্ড এবং চাহিদা। তাই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আগে পছন্দের কলেজের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের চাহিদাপত্র দেখে নেওয়াই ভালো। আবেদন ফর্মগুলোতেও এই ব্যাপারগুলোয় বিস্তারিত বিবরণ থাকে। তবে কিছু কিছু ডকুমেন্টস প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ভর্তি আবেদনের সঙ্গে

সংযুক্তি হিসেবে চেয়ে থাকে। যেগুলো হলো :
১. আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংবলিত একটি আবেদনপত্র।
২. সকল পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট (মূলকপি এবং প্রয়োজনবোধে ইংরেজিতে অনূদিত সত্যায়িত কপি)
৩. টোফেল অথবা স্যাট, জিম্যাট, জিআরই স্কোর সংবলিত টেস্ট রিপোর্ট।
৪. ব্যক্তিগত রচনা (পার্সোনাল ইসি) অথবা উদ্দেশ্য-বিবৃতিপত্র (স্টেটমেন্ট অব পারপাস)।
৫. সুপারিশপত্র (রিকমেন্ডেশন লেটার)।
৬. টিউশন ফির অর্থের উৎসের যেকোনো প্রমাণ অথবা আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন।

এ ছাড়া আবেদনের আগে প্রতিষ্ঠান পছন্দের জন্য দেখতে পারেন বিভিন্ন মানদণ্ড বিবেচনায় কলেজগুলোর রিভিউ :

http://nces.ed.gov/collegenavigator/
http://inlikeme.com/best-college-admissions-websites/
http://www.wsj.com/articles/SB10001424052748704554104575435563989873060

স্কলারশিপের সুযোগ বিস্তারিত দেখতে পারবেন এখানে

এ ছাড়া ভর্তি আবেদন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং ভর্তি সংক্রান্ত অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন এখান থেকে

ইচ্ছাপূরণের জন্য কেবল স্বপ্ন দেখলে বা উচ্চাশা থাকলেই হবে না, সে ব্যাপারে যথাযথভাবে জানতে হবে আগে। তারপর সেই স্বপ্নকে ধাওয়া করুন, সাফল্য আপনাকে অবশ্যই ধরা দেবে।