জাতীয় বেতন স্কেলে শতভাগ বেতন বৃদ্ধির ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশনও বাড়ছে। ফলে সঞ্চয়পত্রে তাঁদের বিনিয়োগের যে ঊর্ধ্বসীমা আছে, তা আরো বাড়ানো অথবা প্রত্যাহার করা হতে পারে। এরই মধ্যে এই ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার বা শিথিল করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহমুদা আখতার মীনা।
অধিদপ্তরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকার ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে বেতন ও পেনশনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করেছে। এর ফলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশনও বেড়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করা বা বাড়ানো দরকার। তা না হলে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাঁদের পাওয়া পেনশন ও সাধারণ ভবিষ্য তহবিলের (জিপিএফ) অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। এতে সরকার নন-ব্যাংকিং খাতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ হারাবে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘পেনশনার সঞ্চয়পত্র শুধু অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং তাঁদের পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন না। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের জীবনের শেষ সম্বল পেনশনের টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে পরবর্তী জীবন কিছুটা সচ্ছলতার সঙ্গে কাটানোর সুযোগ পান।’
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহমুদা আখতার মীনা জানান, পেনশনার সঞ্চয়পত্র নীতিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী, একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রাপ্ত পেনশন ও জিপিএফের অর্থ বাদে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যায় না। সুতরাং সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রাপ্ত পেনশনের অর্থ ও জিপিএফের অর্থের পরিমাণের সমষ্টিই সর্বোচ্চ বিনিয়োগসীমা। কিন্তু নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানে সর্বোচ্চ বিনিয়োগসীমা ৫০ লাখ টাকা হওয়ায় অনেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যাঁরা ৫০ লাখের বেশি অর্থ পেনশন ও জিপিএফ থেকে পেয়ে থাকেন, তাঁরা অতিরিক্ত অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারছেন না।
সূত্র: কালের কণ্ঠ