মেডিকেল কলেজগুলোর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। হাতে তো একেবারেই সময় নেই। ভর্তি-ইচ্ছুকদের প্রথমেই বলব এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলো এখনই। হবে না, পারব না—এ ধরনের ভাবনা ভুলে গিয়ে নিজের সুবিধামতো প্রতিদিনের পরীক্ষা প্রস্তুতির একটা রুটিন করে নাও।
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের জন্য ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্ন থাকবে। এর মধ্যে জীববিজ্ঞান (উদ্ভিদ+প্রাণী) = ৩০, রসায়ন (১ম+২য়) = ২৫, পদার্থবিজ্ঞান (১ম+২য়) = ২০, ইংরেজি = ১৫, সাধারণ জ্ঞান = ১০।
জীববিজ্ঞান: প্রাণিবিজ্ঞান থেকেই যেহেতু বেশি প্রশ্ন করা হয়, তাই প্রাণিবিজ্ঞানের মূল বইয়ের সংজ্ঞা, বইয়ের সব ছক, বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য খুবই ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে। বিশেষ করে মানবদেহ-সম্পর্কিত খুঁটিনাটি সব তথ্য ঝালিয়ে নাও বারবার। প্রতিটি তন্ত্র ও প্রক্রিয়ার ওপর পরিষ্কার ধারণা রাখার সঙ্গে সঙ্গে নতুন বইয়ে যে ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলো সংযুক্ত করা হয়েছে, সেখান থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্ভিদবিজ্ঞানের প্রশ্নগুলো হয়ে থাকে উদ্ভিদের বিভিন্নতা, অণুজীব, জৈবনিক প্রক্রিয়া, অর্থনৈতিকভাবে উপকারী উদ্ভিদ—এসব বিষয়ের ওপর। কোন বিজ্ঞানী কোন মতবাদের জন্য বিখ্যাত, কোন সূত্রটি কত সালে আবিষ্কৃত হয়েছে—এসব তথ্য নখদর্পণে থাকতে হবে।
রসায়ন: রসায়ন দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্ন সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। কোন বিক্রিয়ার সঙ্গে কোন বিজ্ঞানীর নাম জড়িত, কোনটি উপকারী, আবিষ্কারের সাল সেসব বিষয় খেয়াল রেখো। জৈব রসায়ন, পরিবেশ রসায়ন, তড়িৎ রসায়ন, মৌলের পর্যাবৃত্ত ধর্ম, ডি ব্লক মৌল, রাসায়নিক বন্ধন ও অর্থনৈতিক রসায়নের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানে পরিচিত সূত্র এবং যেসব সূত্র ব্যবহার করে সহজে ছোট অঙ্ক কষা যায়, সেসব প্রশ্নই দেওয়া হয়। পার্থক্য, একক মান ইত্যাদি যত ছক আছে ভালোভাবে মনে রেখো, চর্চা কোরো। মনে রেখো, পরীক্ষার হলে কিন্তু ক্যালকুলেটর নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ইংরেজি: এই অংশে বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য Vocabulary তে ভালো হতে হবে। তাহলে Synonym-antonym নিয়ে বাড়তি কষ্ট হবে না। Right forms of verb, tense, parts of speech থেকে প্রতিবছরই প্রশ্ন করা হয়। Narration, voice, phrases and idioms, preposition নিয়ে একটু বাড়তি মনোযোগ দাও।
সাধারণ জ্ঞান: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তথ্য, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘটে যাওয়া আলোচিত ঘটনা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখার জন্য দৈনিক পত্রিকাগুলোয় প্রতিদিন চোখ বোলাও। এ ছাড়া ক্ষুদ্রতম, বৃহত্তম, প্রথম ও একমাত্র এ ধরনের বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দাও। বিসিএস পরীক্ষার গত কয়েক বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে তা কাজে দেবে।
জরুরি কিছু কথা: চারটি ভুল উত্তরের জন্য একটি সঠিক উত্তরের নম্বর কাটা যায়। তাই একটু কৌশলী হতে হবে সর্বোচ্চ সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য। কখনোই আগে পড়া হয়নি, সেসব নতুন করে এখন আর পড়তে যেয়ো না। বিগত বছরগুলোতে বারবার এসেছে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে থাকলে সেসব আয়ত্ত করে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এর পাশাপাশি পড়া বিষয়গুলো বারবার দেখো। ভালো পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ভালো প্রস্তুতি আর আত্মবিশ্বাস। চিকিৎসকের পেশাকে ভালোবেসে যারা এ পথে হাঁটতে চাও, তাদের জন্য রইল শুভকামনা।