চাকরির দুর্মূল্যের বাজারে যেনতেন একটা চাকরি পেলেই হলো! ওমনি বেকাররা যোগ দিচ্ছেন তাতে। একবারও ভাবছেন না, যেখানে যোগ দিচ্ছেন সেই সেক্টরে তার আগ্রহ কতটুকু। দক্ষতাই বা কতটুকু। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিজের আগ্রহের ক্ষেত্র, পছন্দ-অপছন্দ, জানা-শোনার পরিধি এবং ব্যাক্তিত্বের ধরণ বুঝে চাকরির ক্ষেত্র বেছে নেওয়া উচিত। ইদানিং সরকারি-বেসরকরি বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হচ্ছে হরদম। এসব বিজ্ঞাপনে আবেদন করার আগে ভাবুন আরেকবার। ব্যাংকিং জগতে পেশার গড়ার আগে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা জেনে নিন।
- নিজেকে জানুন সবার আগে
অনেক শিক্ষার্থী মনে করেন ব্যাংকে চাকরি মানে শুধু টাকা পয়সার লেনদেন। কিন্তু আসলে এখানে যেমন অর্থসংক্রান্ত অনেক বিশ্লেষণধর্মী কাজ আছে, তেমনি বিপনণ বা গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার মত কাজেরও প্রচুর সুযোগ রয়েছে। তাই বুঝতে হবে কী ধরণের কাজে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আপনার ব্যক্তিত্বের কোন দিকটি আর দশজনের চাইতে ভাল, কোথায় আপনার দুর্বলতা- এসব কিছু মাথায় রেখে ঠিক করতে হবে ব্যাংকের ঠিক কোন ধরণের কাজের জন্য আপনার আবেদন করা উচিত। ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ এবং সেগুলোতে কাজের ধরণ সম্পর্কে আগে থেকে জেনে সে অনুসারে চাকরির আবেদন করলে সাফল্যের সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যায়।
- অনুসরণ করুন অগ্রজদের
চাকরির আবেদনের আগে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখবেন সেখানে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্মরত আছেন কী না। যদি থাকে, তবে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করুন এবং যে বিভাগে বা যে পদে আপনি আবেদন করতে চাইছেন, সে ব্যাপারে তাদের পরামর্শ নিন। শুধু ব্যাংক নয়, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যাপারে প্রাক্তন শিক্ষার্থী বা পরিচিত ব্যাক্তি যিনি সংস্থাটি সম্পর্কে জানেন, তার পরামর্শ গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
- ভালো করুন ভাইভা বোর্ডে
আপনি শিক্ষার্থী হিসেবে যত ভালোই হোন না কেন, ইন্টারভিউ বোর্ডে যদি নিজেকে তুলে ধরতে না পারেন তবে চাকরি পাওয়া মুশকিল। আমি বলব বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষের দিকে বেশ কয়েক মাস সময় হাতে রেখেই চাকরির ইন্টারভিউ মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নেয়া উচিত। আগে থেকে যেখানে আবেদন করছেন সে সংস্থার সম্পর্কে বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য জেনে রাখতে হবে। একেকটি সংস্থার কাজের পরিবেশ, মূল্যবোধ, নিয়মনীতি একেক রকম হয়, তাই আবেদনের আগেই এসব জেনে নিতে পারলে তা ইন্টারভিউয়ের সময় দারুণ কাজে আসে।
- জেনে রাখুন ব্যাংক জগৎ
ব্যাংকে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুধু ফিন্যান্স কিংবা ইকোনমিক্স বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকাই যথেষ্ট নয়; দেশের ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকাও জরুরি। এজন্য আগে থেকে খবরের কাগজ ও বিভিন্ন বিশেষায়িত ওয়েবসাইট থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, সাম্প্রতিক তথ্য নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। এ ধরণের প্রস্তুতির ফলে আবেদনকারীর নিজের কাছেও পরিষ্কার হয়ে যাবে ব্যাংকিং সেক্টরের কোন বিষয়টি নিয়ে তার বেশি আগ্রহ এবং সে অনুযায়ী আবেদনপত্রে কিংবা ইন্টারভিউয়ে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করা সহজ হবে।
- শিক্ষাজীবন থেকেই দৃষ্টি রাখুন কর্মক্ষেত্রের দিকে
একটি নির্দিষ্ট ক্যারিয়ার প্ল্যান না করে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বছর শুধু বই পড়েন এবং পরীক্ষা দিয়ে কাটিয়ে দেন। ফলাফল হয় বুমেরাং। তাই অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আগে থেকেই ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পরিকল্পনা করতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। পাঁচ কিংবা দশ বছর পরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান- ইন্টারভিউ বোর্ডে এ প্রশ্ন অনেকের কাছেই অর্থহীন মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যারা কর্মক্ষেত্রে সফল, তাদের প্রায় সবাই ক্যারিয়ারে কী অর্জন করতে চান, অন্তত আগামী দু-তিন বছরে কোথায় কী কাজ করতে চান, এসব কিছু অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখেন। মনে রাখতে হবে কর্মক্ষেত্রে চাকরির যতটা না অভাব, তার চেয়ে অনেক বেশি অভাব যোগ্য প্রার্থীর। তাই নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে সময় থাকতেই সচেতন হোন।
- আপনি অনলাইনে ব্যাংক জব প্রস্তুতি নিতে ক্লিক করুন : ০১. ব্যাংক নিয়োগ মডেল টেস্ট ০২. ব্যাংক নিয়োগ পূর্ববর্তী প্রশ্ন