নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার দুপুরের পরে প্রথম আলোকে বলেন, ওই শিক্ষকদের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে আজই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চিঠির অনুলিপি জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে আজ দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্যানেলভুক্ত ওই প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তে প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা দারুণ খুশি। আজ দুপুরেই মন্ত্রণালয়ে কথা হয় এমন দুই প্যানেলভুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে। তাঁরা মন্ত্রণালয়ে এসেছিলেন এ বিষয়ে খোঁজ নিতে। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সরকারের এ সিদ্ধান্তে খুবই খুশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল পরীক্ষা হয়। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৪২ হাজার ৬১১ জনকে নিয়োগের জন্য একটি প্যানেল গঠন করা হয়। এঁদের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার জনকে নিয়োগও দেয় সরকার। সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলে প্যানেল থেকে নিয়োগ দেওয়া বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর নিয়োগবঞ্চিত ও প্যানেলভুক্ত শফিকুল ইসলামসহ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ১০ জন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ জুন রায়ে হাইকোর্ট রিট আবেদনকারী ১০ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করলে তা খারিজ করেন আপিল বিভাগ। পরে নওগাঁর ওই শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়।
আজ নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, এই ১০ জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন, বাকি নয়জনের মধ্যে সাতজন যোগ দিয়েছেন।
পাশাপাশি এ বিষয়ে আরও তিন শতাধিক রিট হয়। এখন পর্যন্ত ঘোষিত সব রায় প্যানেলভুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষে গেছে।
মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি মামলায় না লড়ে সবাইকে নিয়োগ দিতে মন্ত্রণালয়ের প্রতি সুপারিশ করে। পরে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চায়। আইন মন্ত্রণালয় আদালতের রায়ের আলোকে সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছে। এরই আলোকে এখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্যানেলভুক্ত সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। কাগজের হিসাবে ২৮ হাজার হলেও তাঁদের ধারণা, সংখ্যাটি আরও কয়েক হাজার কমে যাবে। কারণ, অনেকে এর চেয়ে ‘ভালো’ চাকরিতে হয়তো চলে গেছেন।
সূত্র: প্রথম-আলো