জাতীয়করণ হওয়া দেশের ২৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে আগামী বছর। প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-৪ (পিইডিপি-৪) এর আওতাভুক্ত কয়েকটি ধাপে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের সহকারী শিক্ষক বেতন স্কেলে নিয়োগ দেয়া হবে। গত তিন মাস আগে প্রাথমিক শিক্ষক অধিদফতর (ডিপিই) থেকে ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয়ে এ স্তরের শিক্ষক নিয়োগ দিতে চাহিদাপত্র তৈরি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরে সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদসৃজনের জন্য পাঠানো হয়। এ স্তরের শিক্ষকদের পদসৃজন হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ ছাড়ে পাঠানো হবে।
মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সারাদেশে ৬৫ হাজার ৯৯টি সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে পুরনো সরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬৭২টি এবং নতুন জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় রয়েছে। পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৮৯৫ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয়ে পিইডিপি-৪ এর আওতাভুক্ত প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। প্রথমে পিইডিপির আওতায় এ শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষে তাদের রাজস্বখাতভুক্ত করা হবে।
ডিপিই কর্মকর্তারা জানান, প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষকদের সহকারী শিক্ষক হিসেবে ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে নিয়োগ দেয়া হবে। বছরে ১২ মাসের বেতন ও দুটি বোনাস দেয়া হবে। সে অনুযায়ী সারাদেশে নতুন করে ২৬ হাজার ১৫৯ শিক্ষক নিয়োগে সরকারের নতুন করে ৫৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান বাড়াতে দেশের প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার ৮৯৫ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
তিনি বলেন, পিইডিপি-৪ এ মোট এক লাখ শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা রয়েছে। তার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, সঙ্গীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদসৃজনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পদসৃজন হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একসঙ্গে ২৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের অর্থ ছাড় দেয়া হবে না। কয়েকটি ধাপে এ স্তরের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে নিয়োগের পর এক সপ্তাহের একটি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, সেখানে সব শিক্ষককে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে। যেসব বিদ্যালয়ে এ স্তরের শিক্ষক সঙ্কট থাকবে সেখানে শিক্ষকরা সম্বন্বয় করে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ক্লাস করাবেন বলেও জানান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ।