প্রশ্নপত্র ফাঁস করলে নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ছাড় পাবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ওই সব প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র, এমপিও এবং পরিচালনা কমিটি বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলমান এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত এবং ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্নের লক্ষ্যে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ে বুধবার (১৩ মে) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
সভার কার্যপত্র থেকে জানা যায়, প্রশ্নপত্র পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর প্রায়ই ফেসবুকে প্রকাশ করা হচ্ছে, যার কারণে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া রাজধানীর স্বনামধন্য স্কুলসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশ্নপত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর তা স্মার্টফোনসহ আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে ছবি তুলে বাইরে পাঠানো হচ্ছে। প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে আবারও শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এ অভিযোগে বরগুনা জেলার আমতলীর একটি কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে।
স্মার্টফোন ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয় নিয়ে আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসবে, সেজন্য পরীক্ষা কেন্দ্র, প্রতিষ্ঠান প্রধান, পরিচালনা কমিটি, শিক্ষককে দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের কেন্দ্র, এমপিও ও কমিটি বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিছু সংখ্যক শিক্ষক যারা এমন কাজ করে মহান পেশাকে কলঙ্কিত করবেন,তাদের বেতন দিয়ে কী লাভ?
প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ সার্বিক প্রক্রিয়ায় সবাই মনিটরিংয়ের মধ্যে রয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেউ কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁস বা নিয়ম-কানুন ভাঙার চেষ্টা করবেন না, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
মোবাইল ফোন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীরা নকল করছে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম। এছাড়া বিশেষ কলমে মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার হলে কেন্দ্রসচিব ছাড়া কোনো শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী মোবাইল ফোন, ইলেক্ট্রনিক ঘড়ি বা ইলেক্ট্রনিক কলম নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। কারো কাছে এগুলো পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্র সচিব মোবাইল ব্যবহার করলে অন্য কক্ষে ব্যবহার করতে হবে।
প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি প্রশ্নব্যাংক করার চিন্তা করা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে জেএসসি-জেডিসির পর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। পর্যায়ক্রমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পরীক্ষায়ও এভাবে প্রশ্ন সরবরাহ করা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।