পরিবর্তন আসছে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়। পাসমার্ক ৬০ নম্বর করার প্রস্তাবনা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা কমাতে এমন সুপারিশ বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ণ কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) একটি সূত্র।
সূত্র আরও জানায়, এনটিআরসিএ মেধা তালিকা প্রকাশ করলেও শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হয়। শূন্য পদের বিপরীতে পাস করাদের ৯০ ভাগ চাকরি পাচ্ছেন না। ফলে বিশাল জট তৈরি হয়েছে। এই সমস্যা নিরাসনে প্রতি বছর পরীক্ষা না নিয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো (পিএসসি) কয়েক বছর পর পর পরীক্ষা নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জানা গেছে, বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে- প্রতি বছর শিক্ষক নিবন্ধ পরীক্ষা না নেওয়া, জাতীয় সংসদের শিক্ষা মন্ত্রাণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী পরবর্তী শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস নম্বরের বেজলাইন ৬০ ভাগ নির্ধারণ, প্রথম বারের মতো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএ’র সুপারিশের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও এ বিষয়ে এনটিআরসিএ’র বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিটের বিষয়ে করনীয় নির্ধারন, নিবন্ধন পরীক্ষায় মৌখিক পরীক্ষা নেয়ায় পরীক্ষার সনদের ফরমেট পরিবর্তন ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ২২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিবর্তনে এনটিআরসিএ আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে। গত ৩০ ডিসেম্বর নতুন নীতিমালা জারি করে।
নীতিমালা অনুযায়ী শূন্যপদে নিয়োগের জন্য ৬ হাজার ৪৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উত্তীর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম ধাপে ১২ হাজার ৬১৯ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য নির্বাচিত করা হয়। ওই দিন তালিকা প্রকাশকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নির্বাচিতদের ১ মাসের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দেন। কিন্তু এনটিআরসিএ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার নির্বাচিত শিক্ষক যোগদান করতে পারেননি।
তাদের অভিযোগ, এনটিআরসিএ সুপারিশ করলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নিয়োগ দিচ্ছেন না। আবার এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা শূন্যপদ না থাকলেও নির্বাচিত করেছেন। নারী কোটায় অর্থের বিনিময়ে পুরুষদের নির্বাচিত করেছেন। শিক্ষামন্ত্রণালয় নারী কোটায় নিয়োগের সুপারিশ করলেও আমলে নেননি এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান। ফলে অসংখ্য ব্যক্তি বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।
নিয়োগ জটিলতা নিরাসনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) গত ২ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চেয়ে পত্র দেয়। এর প্ররিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপরও অনেকে নিয়োগ পাননি। বিশেষ করে জাতীয়করণের প্রক্রিয়াধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিতদের বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেয়নি মন্ত্রণালয়।
ফলে নওগাঁর মান্দা মমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক পদে নির্বাচিত রিক্তা খানম (পদার্থবিদ্যা), লুৎফা খাতুন (বাংলা), সাবিনা ইয়াসমিন (ভূগোল), আসমা ইসলামসহ (অর্থনীতি) আরো অনেকে যোগদান করতে পারছেন না।
এনটিআরসিএ সদস্য (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও সনদ) হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতি বছর পরীক্ষা না নেওয়া এবং পাস নম্বর ৬০ করার বিষয়টি বৈঠকের এজেন্ডায় রয়েছে। বিষয়টি আমরা সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। এজন্য বিধিমালায় পরিবর্তন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র: জাগোনিউজ২৪ডটকম