নামি কলেজে আসন খালি, ভর্তি সঙ্কট কাটেনি

অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় তিন দফায় শিক্ষার্থীদের কলেজভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করা হলেও কাটেনি ভর্তি সঙ্কট। অনেক নামি-দামি কলেজে আসন খালি থাকলেও শিক্ষার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বাইরে রয়েছে এখনও প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী।
online
এসব নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক আর কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার ধর্ণা দিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডের কাছে।
এক লাখ আট হাজার ৬৩৯ শিক্ষার্থীকে মনোনীত করে শনিবার (১১ জুলাই) কলেজ ভর্তির তৃতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের হিসেবেই তৃতীয় দফায় তালিকা প্রকাশের পরেও এখনও কলেজে ভর্তির সুযোগ বঞ্চিত রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী।

অভিযোগ রয়েছে, তাড়াহুড়ো করে তালিকা প্রকাশ করায় অনেক নামি-দামি কলেজে শিক্ষার্থীর আসন শূন্য রয়েছে। বাণিজ্য শিক্ষা নির্ভর প্রতিষ্ঠানে মনোনয়ন দিয়ে যেমন আসন ফাঁকা রয়েছে, বিপরীতে বিজ্ঞান কলেজে মনোনয়ন দেওয়ায় রয়েছে বাণিজ্যের আসন খালি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ।

প্রথম তালিকা প্রকাশের সময় রাজধানীর বিশেষায়িত সরকারি বিজ্ঞান কলেজে বাণিজ্যের শাখা না থাকলে এ বিভাগের ২০১ জন শিক্ষার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। শিক্ষক এবং অবকাঠামো না থাকায় সেখানে ভর্তি সঙ্কটের মধ্যে বাণিজ্যে এখনও প্রায় একশ’ আসন ফাঁকা রয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে বলেছে। তারা শিক্ষকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছে। আমরাও রিক্যুজিশন দিয়েছি।

বোর্ডর তথ্যানুযায়ী, ১১ লাখ ৫৬ হাজার ২২৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত আবেদনই করেনি এক লাখ ২৬ হাজার ৬১৮ জন। আর অনলাইনে আবেদন করেও ভর্তির জন্য মনোনীত হয়নি আরো এক লাখ শিক্ষার্থী।

প্রথম দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর ৯ লাখ ২৩ হাজার ১০৫ জন, দ্বিতীয় দফায় ৬ জুন ১৭ হাজার ৬৪৭ এবং তৃতীয় দফায় ১ লাখ ৮ হাজার ৬৪৩ জনকে বিভিন্ন কলেজে ভর্তির জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিন দফায় কলেজে ভর্তির জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৫ জন।

সর্বশেষ ভর্তির অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড বলছে, এখন পর্যন্ত নয় লাখ ৪৬ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পন্ন করেছেন। এ হিসাবেই এখনও কলেজে ভর্তি হতে পারেনি সোয়া দুই লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী নিজে আবেদন করে ভর্তি না হলেও তাদের নাম ব্যবহার করে বোর্ডের কাছে কয়েকটি কলেজ তালিকা পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে ওই শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারছে না।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি এলাকার এক অভিভাবক বলেন, তার মেয়ের নামে আবেদন করা হয়েছে। অথচ তিনি রিলিজ স্লিপ নিয়ে মেয়েকে ভর্তি করাতে পারছেন না।

মনোনয়ন তালিকা নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট কাটাতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকেরা শিক্ষাবোর্ডে ঘুরছেন প্রতিদিন। কয়েকটি কলেজও আবেদন করেছেন সঙ্কট কাটাতে।

ঢাকা সিটি কলেজে প্রায় এক হাজার ৬০০ আসনের মধ্যে এখনও বাণিজ্যে ৬০০ আসন শূন্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান। এখানে দ্বিতীয় মেধা তালিকায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মাত্র দু’জনকে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মানবিকে প্রায় আড়াইশ’ আসন শূন্য রয়েছে বলে জানান এ কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম।

ঢাকা কমার্স কলেজেও শূন্য রয়েছে প্রায় এক হাজার আসন। উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে বাণিজ্যে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আসফাকুস সালেহীন বাংলানিউজের কাছে কিছু সমস্যা থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, কিছু অভিযোগ এসেছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত তৃতীয় তালিকায় স্থান প্রাপ্তরা বিলম্ব ফি ছাড়া ভতি হতে পারবে। তৃতীয় তালিকার শিক্ষার্থীরা ভর্তির পর চতুর্থ তালিকায় আর সমস্যা থাকবে না বলে আশা করেন কলেজ পরিদর্শক।

 

 

সৌজন্যে: বাংলা নিউজ২৪.কম