হোম পরীক্ষা চাকুরী উচ্চশিক্ষা

নর্থ ‍সাউথ ইউনিভার্সিটির জমি ক্রয়ে অনিয়ম

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) অনিয়ম করে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের জমি ৫০০ কোটি টাকায় ক্রয় করার আয়োজন সম্পন্ন করেছে। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে প্রকাশ, এসব অনিয়ম-দূর্নীতিকে কেন্দ্র করে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়া ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা জড়িয়ে পড়ছেন সংঘাতে। দুর্নীতি আর অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নানাভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন বেশ কয়েকজন বোর্ড সদস্য।

সূত্রের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন জানায়, এনএসইউ’রএক পক্ষ এতটাই শক্তিশালী যে তারা নানা কৌশলে আরেক পক্ষকে বোর্ডসভায় আসতেই দেয় না। আর এই শক্তিশালী গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রেমন্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেনজির আহমেদ। বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তারা ট্রাস্টের তহবিল থেকে অর্থ লুটসহ জমি কেনার সব কাজ সম্পন্ন করে যাচ্ছেন।

প্রতিবেদনে প্রকাশ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আবাসিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার নামে রাজধানী ঢাকার পাশে পূর্বাচলে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কেনার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু জমি কেনার জন্য ট্রাস্টি বোর্ড কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি। মাত্র এক দিনের নোটিসে জরুরি সভা ডেকে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে প্রকাশ, বায়না করা জমির যে মূল্য দেখানো হয়েছে তাও প্রচলিত বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। আশালয় হাউজিং যে জায়গা এনএসইউর কাছে বিক্রি করছে, এর সরকারি মূল্য প্রতি বিঘা ৯ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। পাশের জমিও অন্য ক্রেতার কাছে আবাসন প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করেছে গড়ে ১৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা দরে। এনএসইউর কাছে বিক্রি করা জমির মূল্য গড়ে প্রতি বিঘা সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২৫০ বিঘা জমির মূল্য দাঁড়ায় ৫০ কোটি টাকা। সেখানে এনএসইউ প্রতি বিঘা জমি কিনছে দুই কোটি টাকা দরে। সে হিসাবে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের জমি কেনা হচ্ছে ৫০০ কোটি টাকায়।

বিভক্ত ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের রবাত দিয়ে প্রতিবেদনে প্রকাশ, জমি কেনার জন্য ২৩ জুলাই বিকালে জরুরি বোর্ডসভা ডাকা হলেও ওই দিন সকালেই ২৮টি ব্যাংক এবং এগুলোর শাখা থেকে ৩৬টি চেকের মাধ্যমে ২৪৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা তোলা হয় এবং এক কোটি ১৬ লাখ টাকার নগদ চেক দেওয়া হয় আশালয় হাউজিং ডেভেলপমেন্টের নামে।

এদিকে এনএসইউর আজীবন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল গত ৫ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবের কাছে এক লিখিত চিঠিতে অভিযোগ করেন, ‘নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির তহবিলের ওপর বোর্ড সদস্যদের কোনো আর্থিক সহযোগিতা নেই। এ তহবিল শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে সংগৃহীত। এখন এ বিশাল তহবিল লুটপাটের জন্যই বড় ধরনের কেলেঙ্কারির মাধ্যমে বোর্ডসভার ভুয়া অনুমোদন দেখিয়ে অত্যন্ত চড়া দামে জমি কেনা হচ্ছে।