সুমনা শারমিন: একসময় পড়ালেখা শেষ করে চাকরি নামক সোনার হরিণটির পিছনে দৌড়ানো শুরু করত সবাই। তবে এখন সময় বদলেছে। বর্তমান সময়ে পড়াকালীনই তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হতে চায়। কারণ এখন নিজেকে এগিয়ে রাখার প্রতিযোগিতায় শীর্ষে থাকতে চায় সবাই। এই সময়ের তরুণ-তরুণীদের পছন্দের পেশা, কাজের পরিবেশ ও বাস্তবতা নিয়ে
এখন তরুণরা চায় নিজেদের মেধা খাটানোর জায়গার পাশাপাশি যে কাজটি করবে সেটি যেন নিজের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। সহজ কথায় প্রতিদিনের কাজটিকে সে উপভোগও করতে চায়। সবেমাত্র পড়াশোনা শেষ করে যারা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে, তাদের প্রতিযোগিতাটা এখন অনেক বেশি। আর এই প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকে যারা নতুন নতুন আইডিয়া তৈরির পাশাপাশি প্রাকটিক্যাল কাজে দক্ষ। বর্তমানে তরুণরা একদিকে যেমন প্রচলিত পেশার দিকে ঝুঁকছে, তেমনি বিভিন্ন সৃজনশীল ও চ্যালেঞ্জিং পেশাও বেছে নিচ্ছে। আবার অনেকে সুবিধাজনক পেশা বেছে নিয়েই থাকছে চিন্তামুক্ত। নিজেদের স্বকীয়তা ঠিক রেখে মেধা ও মননের সমন্বয় ঘটিয়ে পেশাজীবন শুরু করতেও ইচ্ছুক বেশির ভাগ তরুণ।
নিজের ক্যারিয়ার কেমন হবে? সেটা অনেকটাই নির্ভর করে নিজের ধরনের ওপর। আপনি মানুষটা কোন্ ধরনের? তার ওপর ভিত্তি করে যদি ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু করেন, তাহলে সাফল্য আসবে নিশ্চিত। নিজে যদি বুঝতে না পারা যায় কোন্ রাস্তাটা ভালো তাহলে মা-বাবার সাথে, বন্ধুদের সাথে এবং ক্লাসের শিক্ষকদের সাথে একটু আলোচনা করে নিলেই হয়। তবে পরামর্শ নেবেন অন্যদের কিন্তু নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার চেষ্টা এবং সাহস থাকতে হবে।
০১. ইঞ্জিনিয়ারিং
আমাদের দেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আর্কিটেকচার পড়ার সুযোগ। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বেশকিছু ভাগ রয়েছে। এর মধ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং, পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং উল্লেখযোগ্য। আর আর্কিটেকচারের মূল বিষয় একটি হলেও এই বিষয়ে পেশা গড়ারও বিভিন্ন খাত রয়েছে। কেউ কেবল বিল্ডিং ডিজাইনে, কেউ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ডিজাইনে, কেউ ইন্টেরিয়র ডিজাইনে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। উভয় ক্ষেত্রেই ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এসব বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি দরকারমতো এমবিএ, মাস্টার্স, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করার সুযোগও আছে। এখনকার তরুণদের কাছেও ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশল একই রকম আকর্ষণীয় পেশা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি বর্তমানে স্থাপত্য বা আর্কিটেক্টও তরুণদের পছন্দের তালিকার শুরুর দিকেই স্থান করে নিয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার এবং স্থপতিদের ক্যারিয়ারের স্থিতিশীলতা যেমন অন্য অনেক পেশা থেকে বেশি, তেমনি এসব পেশায় সামাজিক মান-মর্যাদাও ঈর্ষণীয়।
০২. ব্যাংকিং
বর্তমানে চাকরির বাজারে ভালো অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকিং সেক্টর। সদ্য শিক্ষাজীবন শেষ করা তরুণ-তরুণীদের পছন্দের প্রথম কাতারে রয়েছে এই পেশা। কারণ এই পেশাটিকে সবাই চিন্তামুক্ত একটি পেশা হিসেবেই মনে করেন। ব্যাংকিং সেক্টরে প্রাইভেট ব্যাংকগুলো প্রবেশ করায় এই পেশায় তরুণদের সুযোগ দিনে দিনে বাড়ছে। প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর সেবার মান সরকারি ব্যাংকের তুলনায় ভালো বলে গ্রাহকসংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই চাহিদার সাথে তাল মেলাতে বাড়ছে বেসরকারি ব্যাংকের নতুন শাখা। সেই সঙ্গে সেবার মান উন্নত করতে প্রয়োজন পড়ছে অধিক কর্মীর। আর ভালো জনশক্তি সংগ্রহের জন্য ব্যাংকিং সেক্টরে কাজের ভালো পরিবেশের সাথে রয়েছে ভালো বেতন কাঠামো। তাই এই পেশার জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে উঠছে তরুণরা। ব্যাংকের নিয়োগে বিভিন্ন পদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা চাওয়া হলেও এমবিএ/এমবিএম/পোস্ট গ্র্যাজুয়েট/সিএ ডিগ্রিসহ বিভিন্ন ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়।
অনলাইন ব্যাংক জব মডেল টেস্ট: ব্যাংক জব মডেল টেস্ট
০৩. টেলিকম
আপনি টেলিকমিউনিকেশনে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে গ্র্যাজুয়েটসহ নেটওয়ার্কিং, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন বিষয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। পাশাপাশি এ সেক্টরের জন্য নিজেকে গড়তে হবে স্মার্ট ও রুচিশীলভাবে। হতে হবে দক্ষ ও প্রগতিশীল। থাকতে হবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা। এখানে পুঁথিগত বিদ্যা আর নিজের ব্যক্তিগত দক্ষতার সমন্বয়ে যে কেউ গড়তে পারেন নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। বেতন ও কাজের পরিবেশও ভালো।
০৪. মার্কেটিং
চ্যালেঞ্জিং অথচ সম্ভাবনাময় একটি খাত হলো সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং। এ সেক্টরে চাকরি পাওয়ার জন্য সাধারণত বিবিএ, এমবিএ কিংবা মার্কেটিং, ফিন্যান্স ও হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক হতে হয়। যারা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং উপযুক্ত স্থান। পণ্য বাজারজাত করতে প্রচুর সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কর্মীর প্রয়োজন। যদিও একসময় সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং একই ডিপার্টমেন্ট ছিল কিন্তু বর্তমানে সেলস ও মার্কেটিং আলাদা আলাদা ডিপার্টমেন্ট ধরা হয়। দেশীয় কোম্পানির পাশাপাশি বিদেশি অনেক কোম্পানিও বাংলাদেশে তাদের পণ্য বাজারজাত করছে। ফলে বাড়ছে এ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান। তাই এসব বিভাগে প্রচুর দক্ষ লোকবল প্রয়োজন হচ্ছে।
০৫. মিডিয়ায় ক্যারিয়ার
ক্যারিয়ার হিসেবে ইলেকট্রনিক মিডিয়া অনেকের কাছেই আকর্ষণীয় ও পছন্দের কাজ। বর্তমানে অনেক তরুণ-তরণীই ধাবিত হচ্ছে বিভিন্ন গ্ল্যামারস পেশার দিকে। এ ধরনের পেশার তালিকায় বর্তমানে যে ক্ষেত্রটি উঠে আসছে তা হলো গণমাধ্যম বা মিডিয়া। আর ছোট পর্দার মোহনীয় আকর্ষণের কারণে ইলেকট্রনিক মিডিয়া রয়েছে পছন্দের প্রথমে। এখানকার ক্যারিয়ারে খ্যাতি, সুনাম, সুপরিচিতির পাশাপাশি রয়েছে উজ্জ্বল জীবনের হাতছানি। বিশ্বব্যাপী তো বটেই, বাংলাদেশেই রয়েছে এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার বিশাল ক্ষেত্র।
অনলাইনে ফ্রী মডেল টেস্ট দিন নিজেকে সেরা হিসেবে গড়ে তুলুন
অনলাইন বিসিএস মডেল টেস্ট: বিসিএস মডেল টেস্ট
অনলাইন ব্যাংক জব মডেল টেস্ট: ব্যাংক জব মডেল টেস্ট
অনলাইন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা
মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ভর্তি পরীক্ষা: মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা
অনলাইন সরকারী নিয়োগ পরীক্ষা: সরকারী নিয়োগ পরীক্ষা
সূত্র: নয়াদিগন্ত