অনলাইন মনিটরিংয়ের আওতায় আসছে প্রাথমিক শিক্ষার সব প্রশিক্ষণ

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সব প্রশিক্ষণ ইন্টারনেটের (অনলাইন) মাধ্যমে ভিডিও মনিটরিংয়ের আওতায় আসছে। অধিদফতরের কর্মকর্তরা নিজ দফতরে বসেই প্রত্যন্ত এলাকায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ করবেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রশিক্ষণ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর শিক্ষক, সুপারভাইজার ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি করে সারাদেশে প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে সঠিকভাবে এ বিশাল কার্যক্রমের বাস্তব অবস্থা সর্বক্ষেত্রে সরাসরি (ফেস-টু-ফেস) পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এজন্য উদ্ভাবনমূলক টেকনোলজি এবং বিকল্প পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট ও একসেস-টু-ইনফরমেশন প্রোগ্রাম এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন ও যোগাযোগ করে। সে আলোকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সীমিত পরিসরে ই -টেকনোলজি ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, পরিবীক্ষণ ও ফলোআপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলাফল ভাল হলে কার্যক্রমটি সম্প্রসারণ করা হবে।

মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিজ নিজ দফতরে বসে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাব এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে জেলা, উপজেলা, ক্লাস্টার ও স্কুল পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ দেখতে পারবেন। আয়োজনকারী ও অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথা বলে প্রশিক্ষণ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন। এর জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে দুই প্রান্তে স্কাইপ বা অন্য কোন প্রযুক্তি সংযুক্ত ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাব অথবা মোবাইলফোন ব্যবহার করা হবে। এসব প্রযুক্তি নতুন করে ক্রয় করতে হবে না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের প্রযুক্তি আগে থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে। আলাদা খরচের সম্ভাবনা নেই। শুধুমাত্র স্থানীয় কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা সক্রিয় হলেই এটি সফল হবে।

অধিদফতরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য জেলা, উপজেলা ভিত্তিক দায়িত্ব দেয়া হবে। এজন্য শিগগিরই একটি অফিস আদেশ জারি করা হবে। প্রশিক্ষণ নিরবিচ্ছিন্ন করতে প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্টদের স্কাইপি আইডি ও সংশ্লিষ্ট উপকরণসমূহ তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। এজন্য স্কাইপি আইডি খুলতে হবে। স্কাইপি আইডি খোলার ক্ষেত্রে ইংরেজিতে জেলা/ উপজেলার নামের প্রথম পাঁচটি শব্দের সঙ্গে ২০১৬ শব্দ ব্যাবহার করে আইডি খুলতে হবে। শব্দ সংখ্যা বেশি হলে জেলা/ উপজেলার নামের প্রথম পাঁচটি অক্ষরের সঙ্গে ১৬ শব্দ ব্যবহার করে আইডি খুলতে হবে।

পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) ও উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তাদের (ইউইও) সঙ্গে স্কাইপের মাধ্যমে যোগাযোগ করবেন। এজন্য তাদেরকেও স্কাইপি আইডি খুলতে হবে। আইডি খুলতে উদাহরণ স্বরূপ ইউআরসি, টেকনাফ, কক্সবাজার urctekna2016  এভাবে শব্দ ব্যবহার করতে হবে। জেলার সংশ্লিষ্ট স্কাইপি আইডি ইমেইলের মাধ্যমে জেলা শিক্ষাকর্মকর্তারা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) এর কাছে পাঠাবেন।

অধিদফতরের কর্মকর্তাদের জেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণ পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেয়া হবে। দায়িত্ব প্রদানের ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এসব প্রতিবেদন বিভাগ ভিত্তিক সমন্বিত (কম্পাইল) করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য অধিদফতরের ৮ জন সহকারী পরিচালককে (প্রশিক্ষণ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদেরকেও ৭ দিনের মধ্যে বিভাগ ভিত্তিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। আট বিভাগের সমন্বিত মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরিতে দুইজন সহকারী পরিচালককে (প্রশিক্ষণ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদেরও সাত দিনের মধ্যে মূল প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সুপারিশসহ কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে। যেসব কর্মকর্তা প্রতিবেদন তৈরিতে দক্ষতা ও সঠিক সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের পরবর্তিতে সরাসরি প্রশিক্ষণ পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য তথ্যজ্ঞ কর্মকর্তা হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) সঞ্জয় কুমার চৌধুরী জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীন সব প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মানোন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মনিটরিং ও মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরবর্তি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য গত ২৭ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।

সূত্র: জাগো নিউজ ২৪ ডট কম