পিতৃত্বকালীন ছুটি হচ্ছে ১৫ দিন

মা ও শিশুসন্তানের সুষ্ঠু পরিচর্যা করতে কর্মজীবী বাবার জন্য ১৫ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বিধিগত খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানান।

গত বছর ৮ থেকে ১০ জুলাই অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান করার প্রস্তাব করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন। তিনি তাঁর প্রস্তাবে বলেন, ‘কর্মজীবী নারীদের জন্য ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর করা হয়েছে। মা ও নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যার জন্য পিতার সময় দেওয়া জরুরি। এ জন্য ১৫ দিনের ছুটির বিধান করা যেতে পারে।’ সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনার পর পিতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়টিকে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রস্তাব পাঠানোর আগে আমরা জেলার সব কর্মকর্তাকে নিয়ে বৈঠক করি। সেই বৈঠকে একজন তরুণ কর্মকর্তা মাতৃত্বকালীন ছুটির আদলে পিতৃত্বকালীন ছুটির প্রস্তাব ডিসি সম্মেলনে দেওয়ার সুপারিশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত সব কর্মকর্তা বিষয়টিতে সমর্থন দেন। পরে ডিসি সম্মেলনেও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নজর কাড়ে।’ এর পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের দিনে যৌথ পরিবার ছিল। কেউ না কেউ নবজাতক ও তার মায়ের যত্ন নিতে পারত। এখন ছোট পরিবার। অনেকেরই দাদা-দাদি বা নানা-নানি থাকেন না। সেই ক্ষেত্রে বিষয়টি খুবই জটিল হয়। এসব ক্ষেত্রে সব কর্মজীবী বাবাই ছুটি নেন। বিষয়টি কার্যকর হলে কর্মজীবী বাবা উপকৃত হবেন। তা ছাড়া সারা বিশ্বেই শিশুদের গুরুত্ব দেওয়া হয়। আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হিসেবে শিশুদের যথাযথ পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এর আগে ২০১০ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করা হয়। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব দিয়েছিল মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়টিও ছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় পিতৃত্বকালীন ছুটির প্রস্তাব আলাদাভাবে উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়। এর এক বছর পর থেকে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর করা হলেও পিতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানেও পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান রয়েছে জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন জনপ্রশাসনের বিধিবিধান তৈরির পালা। অর্থাৎ একজন কর্মজীবী বাবা চাকরিজীবনে কয়বার এ সুযোগ পাবেন তা বিধি দিয়ে নির্ধারিত হতে হবে। তা ছাড়া অনেক কর্মজীবী বাবা একটানা ছুটি না নিয়ে কয়েক দফায় এ ছুটি নিতে পারেন। এ সময় ভাতা দেওয়ার বিষয়ে মত নিতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে।

সূত্র:কালের কণ্ঠ